রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। বুধবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটে বিচারপতি মো. রেজাউল হকের একক বেঞ্চ এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে, হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল আবেদনের শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক আর হক। তিনি জানান, হাইকোর্টের রায়ের অনুলিপি প্রকাশ এবং নিয়মিত লিভ টু আপিল দাখিল না হওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।
এর আগে, বুধবার দুপুরে বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান এবং বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন মঞ্জুর করেন। আদালত তার জামিন প্রশ্নে এর আগে জারি করা রুলটিকে যথাযথ ঘোষণা করেন। চিন্ময়ের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া।
হাইকোর্টের এই জামিন আদেশের পরপরই রাষ্ট্রপক্ষ তা স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর কয়েক দিন পর, ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়, যেখানে আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়। এরপর, গত বছরের ২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরেকটি সমাবেশ হয়। এই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকায় গ্রেফতার করা হয়। পরদিন তার জামিন আবেদন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কর্তৃক নাকচ হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত কর্তৃক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশের পর, চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয় এবং আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ আদালত চত্বরের বাইরে নিহত হন। সেই থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস কারাগারে আটক রয়েছেন।
আরও পড়ুন: আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার প্রধান আসামি চন্দন ভৈরব থেকে গ্রেপ্তার
চলতি বছরের ২ জানুয়ারি চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালত চিন্ময় দাসের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। পরবর্তীতে তিনি হাইকোর্টে জামিনের জন্য আবেদন করেন। সেই আবেদনের শুনানি শেষে গত ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চান কেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে জামিন দেওয়া হবে না। বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ দুই সপ্তাহের জন্য এই রুল জারি করেছিলেন।