অনলাইন ডেস্ক:
বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে থাকা ঐতিহাসিক দ্বীপ কুতুবদিয়া আজ অস্তিত্ব সংকটে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ভাঙন আর জলোচ্ছ্বাসে ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছে এই জনপদ। শত বছরের স্মৃতি আর মানুষের স্বপ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কুতুবদিয়াকে বাঁচাতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে আগামী ২৯ এপ্রিল ঢাকায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে।
১৫৬৯ সাল থেকে শুরু করে ১৯৯১ সালের ভয়াল ঘূর্ণিঝড়—প্রাকৃতিক দুর্যোগের দীর্ঘ ইতিহাস কুতুবদিয়ার। বারবার আঘাত এলেও এখানকার মানুষ বুক চিতিয়ে লড়াই করেছে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান অভিঘাতে আজ তারা অসহায়। এপ্রিল থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরের রুদ্রমূর্তি এখানকার মানুষের জীবন করে তোলে দুর্বিষহ। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড়ে হাজারো মানুষের জীবনহানি আজও এখানকার মানুষের মনে গভীর ক্ষত হয়ে আছে।
অথচ, আজও এই দ্বীপের চারপাশে নেই কোনো টেকসই বেড়িবাঁধ। একটু একটু করে সাগর গ্রাস করছে কুতুবদিয়ার মানচিত্র, কেড়ে নিচ্ছে মানুষের ঘরবাড়ি, ফসল আর ভবিষ্যৎ। তাই কুতুবদিয়ার মানুষের একটাই প্রশ্ন—কবে তারা পাবে টেকসই বেড়িবাঁধ? কবে তারা নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবে? আর কত প্রাণ হারালে রাষ্ট্র তাদের দিকে ফিরে তাকাবে?
কুতুবদিয়ার মানুষ আজ তাদের প্রাণের দাবি জানাচ্ছে:
১. অবিলম্বে কুতুবদিয়ার চারপাশে টেকসই ও মানসম্পন্ন বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে।
২. ভূমি ক্ষয়রোধে বিজ্ঞানভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩. উপকূলীয় জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় জরুরি বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে।
৪. উপকূলীয় এলাকা রক্ষায় আলাদা তহবিল এবং জাতীয় জরুরি সুরক্ষা প্রকল্প চালু করতে হবে।
কুতুবদিয়ার মানুষ মনে করে, আজ যদি কুতুবদিয়া ডোবে, তবে কাল সমগ্র উপকূল ডুববে। আজকের কান্না শুধু কুতুবদিয়ার নয়, আগামীতে তা গোটা বাংলাদেশের কান্না হতে পারে। তাই, দ্বীপটিকে বাঁচাতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি।
এই দাবিতে সোচ্চার হয়ে ঢাকাস্থ সকল কুতুবদিয়াবাসী আগামী ২৯ এপ্রিল, মঙ্গলবার বিকাল ৪:৩০ ঘটিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আসুন, সবাই মিলে কুতুবদিয়াকে বাঁচানোর এই লড়াইয়ে শামিল হই।