কুতুবদিয়ায় টেকসই বেড়িবাঁধের দাবিতে শিল্পীদের অভিনব প্রতিবাদ

উপজেলা কক্সবাজার কৃষি পরিবেশ পর্যটন বিশেষ প্রতিবেদন ব্যবসা ও বাণিজ্য ভ্রমণ মতামত
ছবি : ডিএনএন

কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:

বঙ্গোপসাগরের কোলে জেগে থাকা দ্বীপ কুতুবদিয়ার ভাঙা বেড়িবাঁধ যেন এখানকার মানুষের দীর্ঘশ্বাস। বছরের পর বছর ধরে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি, ফসলের ক্ষেত, এমনকি শেষ আশ্রয়স্থল কবরস্থানও – এই যেন তাদের নিত্যসঙ্গী। উন্নয়নের জোয়ার যখন সারা বাংলাদেশে সোনালী ছবি আঁকছে, তখন কুতুবদিয়া যেন সাগরের ঢেউয়ের মতোই অবহেলিত। এই নীরব কান্না আর সহ্য করতে না পেরে অভিনব প্রতিবাদে শামিল হলেন দ্বীপের একঝাঁক শিল্পী।

আজ শনিবার (২৬শে এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আলী আকবর ডেইল বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছে ভাঙা বেড়িবাঁধ এলাকায় খালি গায়ে, বুকে ও পিঠে বিভিন্ন স্লোগান লিখে প্রতিবাদী গান গেয়েছেন তারা। শিল্পীদের কণ্ঠে ছিল কুতুবদিয়ার মানুষের চাপা ক্ষোভ আর বাঁচার আকুতি। তাদের গানের ভাষায় ফুটে উঠেছে অবহেলার চিত্র:

“অবহেলিত কুতুবদিয়া জন্মভূমি আমার,     দেখনা নইলে উন্নয়নে পাচ্ছিনা অধিকার। সারাবাংলা উন্নয়নে সোনালী ছবি হাসছে,  জন্মভূমি কুতুবদিয়া সাগরের জলে ভাসছে।  হোক প্রতিবাদ, হোক প্রতিবাদ, মুক্তি চাই।”

এই ব্যতিক্রমী প্রতিবাদের নেতৃত্ব দেওয়া শিল্পী শাহীন আবরার বলেন, “প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের পানিতে আমাদের বসতভিটা, চাষাবাদের জমি, এমনকি কবরস্থানের জায়গাটুকুও তলিয়ে যায়। আমরা খুব কষ্টে আছি। দেশের এত উন্নয়নের মাঝেও আমরা কতটা অবহেলিত, তা মানুষ জানুক। সেই কারণেই আমাদের গানে গানে এবং চিত্রকর্মের মাধ্যমে এই প্রতিবাদ।”

শিল্পীরা কুতুবদিয়ার ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধকে একটি টেকসই ‘সুপার ডাইকে’ রূপান্তরিত করার জোর দাবি জানিয়েছেন। একইসাথে বাঁধের দুই পাশে সবুজ বনায়নের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সুরক্ষা জোরদার করারও আহ্বান জানান তারা। তাদের প্রত্যাশা, দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরে দ্বীপের মানুষের দীর্ঘদিনের এই দুঃখ ঘুচবে।

সাগরের ঢেউয়ের সাথে শিল্পীদের প্রতিবাদী সুর মিশে কুতুবদিয়ার আকাশে-বাতাসে এক নতুন বার্তা ছড়িয়ে দিল – আর নয় অবহেলা, এবার টেকসই সমাধানের দাবি। এখন দেখার পালা, এই অভিনব প্রতিবাদ উপকূলের মানুষের ভাগ্য কতটা পরিবর্তন করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *