কক্সবাজার প্রতিনিধি:
বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজলের মা এবং সাবেক সংসদ সদস্য সালেহা খানম (৮৩) আর নেই। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জটিল রোগে ভোগার পর বুধবার রাত ১০টা ২০ মিনিটে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সালেহা খানমের মৃত্যুর সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন তার সন্তান লুৎফুর রহমান কাজল। মৃত্যুকালে তিনি ৩ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আজ আসরের নামাজের পর কক্সবাজার শহরের হোটেল নিরিবিলির মাঠে মরহুমার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মাগরিবের নামাজের পর মরহুমার গ্রামের বাড়ি পোকখালী গোমাতলী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।
মরহুমা সালেহা খানম সম্প্রতি অসুস্থ হলে প্রথমে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছিল।
এক নজরে সালেহা খানম:
১৯৪২ সালে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সালেহা খানম। তার পিতার নাম হাজী আবদুল জলিল। ১১ ভাই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন চতুর্থ।
তিনি কক্সবাজার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও কক্সবাজার সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৬২ সালে কক্সবাজারের পোকখালীর গোমাতলীর বিশিষ্ট শিল্পপতি মরহুম আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
দাম্পত্য জীবনের পাশাপাশি সালেহা খানম রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র মহিলা এমপি মনোনীত হয়েছিলেন এবং মানবসেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ ও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে তিনি সবসময় সোচ্চার ছিলেন।
চার ছেলে ও এক কন্যার রত্নগর্ভা এই মা সন্তানদের উচ্চশিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য নিরলস পরিশ্রম করেছেন। তার বড় কন্যা জেসমিন রহমান এবং ছেলেরা হলেন লুৎফুর রহমান কাজল (সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক), মশিউর রহমান রাজন ও মাহবুবুর রহমান শাহীন। তার ছোট ছেলে মোর্শেদুর রহমান তোহিন সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন।
স্বামী মরহুম মোস্তাফিজুর রহমানের প্রতিষ্ঠিত নিরিবিলি গ্রুপের পরিচালকের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেন।
সালেহা খানমের জীবন অধ্যবসায়, ত্যাগ ও দেশপ্রেমের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মাতৃত্বের পাশাপাশি রাজনৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব পালনে তার সমন্বয় ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। তার মৃত্যুতে কক্সবাজারের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।