কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপের ৯ হাজার ৪৬৭ একর ভূমির বন্দোবস্ত বাতিল করেছে সরকার। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) দেওয়া এই জমি এখন ফেরত পাচ্ছে বন বিভাগ। ভূমি মন্ত্রণালয়ের খাসজমি-২ শাখার উপসচিব মাসুদ কামাল গত ৫ মে এ সংক্রান্ত স্মারকে স্বাক্ষর করেছেন।
স্মারকে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া, প্রস্তাবিত সমুদ্র বিলাস ও চর মকবুল মৌজার মোট ৯ হাজার ৪৬৭ একর খাসজমির বন্দোবস্ত বাতিল করা হলো।
ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এর আগে ইকোপার্কের জন্য জমি দেওয়ার পর সোনাদিয়া দ্বীপে গাছ কাটা ও চিংড়ির ঘের নির্মাণসহ পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যকলাপের ফলে দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এই ক্ষতি পুনরুদ্ধারের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেবে।
উপসচিব মাসুদ কামাল জানান, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, খালের মুখ ও শাখা-প্রশাখার বাঁধ অপসারণ, বালিয়াড়ি পুনরুদ্ধার, সৈকত সংরক্ষণ এবং ম্যানগ্রোভ ও নন-ম্যানগ্রোভ গাছের চারা রোপণ করা হবে। এছাড়াও দ্বীপের পরিবেশ পুনরুদ্ধারে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ইকো-ট্যুরিজম পার্ক গড়ার শর্তে বেজাকে নামমাত্র মূল্যে এই ভূমি বরাদ্দ দেয় কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। তবে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ অনুযায়ী ইকো-ট্যুরিজম পার্ক দ্বীপের পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে উল্লেখ করে বেলা (বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি) রিট দায়ের করলে হাইকোর্ট জমির বরাদ্দ স্থগিত করে দেয়।
এদিকে, গত ১৭ মার্চ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় জানায়, সোনাদিয়া দ্বীপের ৯ হাজার ৪৬৭ একর বনভূমিকে রক্ষিত এলাকা ঘোষণা করার ফলে সেখানে অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ হবে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করা যাচ্ছে।
বেজার পরিচালক (বিনিয়োগ উন্নয়ন ও মনিটরিং) শাহীন আক্তার সুমি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে সোনাদিয়া দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।