১ লাখ ২২ হাজার মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে ভুয়া সনদ নেওয়ার অভিযোগ

আইন ও আদালত গণমাধ্যম জাতীয় প্রধান খবর বাংলাদেশ বিশেষ প্রতিবেদন
প্রতীকী ছবি

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) সারাদেশে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্ত করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছে। জামুকার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সনদধারী মোট মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার। তবে, ১৯৯৪ সালে বিএনপির আমলে করা ৮৬ হাজার মুক্তিযোদ্ধার তালিকাটিকে ভিত্তি ধরলে, প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার মুক্তিযোদ্ধার সনদ ভুয়া বলে প্রতীয়মান হয়।

এই পরিস্থিতিতে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পাওয়া ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ দেন। এরপর দেশজুড়ে হাজার হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে।

প্রথম ধাপে, কুমিল্লা অঞ্চলের ৩১ জন অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধার সনদ যাচাইয়ের জন্য আজ সোমবার (২ জুন) শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। কুমিল্লা সার্কিট হাউজে সকাল ১০টা থেকে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। শুনানিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি বা তার পরিবারের সদস্যদের মুক্তিযুদ্ধকালীন ঘটনা ও তথ্যপ্রমাণসহ অংশগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

জামুকার মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন জানান, ঢাকায় বসে কারও মুক্তিযোদ্ধা সনদ আসল না ভুয়া, তা যাচাই করা সম্ভব নয়। इसीलिए, অভিযোগ ওঠা মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য যাচাইয়ের জন্য মাঠ পর্যায়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জামুকা সদস্য খ. ম. আমীর আলী বলেন, বিভিন্ন সরকার শুধু মুক্তিযোদ্ধা সনদ দিয়ে গেছে, কিন্তু কে আসল আর কে ভুয়া তা যাচাই করেনি। তারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান অক্ষুণ্ন রাখতে ভুয়াদের শনাক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সারাদেশে প্রায় ৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা থাকতে পারে এবং তাদের চিহ্নিত করে একটি ডেটাবেজ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। তবে জামুকার ধারণা, এই সংখ্যা লাখ ছাড়াতে পারে।

জামুকার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার ৫০ জন এবং সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তের সংখ্যা ৮৯ হাজার ২৩৫ জন। গেজেট বাতিল ও বয়সসীমা নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয়ে মোট ২ হাজার ৭১৯টি মামলা রয়েছে। ইতোমধ্যে, নির্ধারিত বয়সের (১২ বছর ৬ মাস) কম হওয়ায় ২ হাজার ১১১ জন মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করা হয়েছে। গত ১৫ বছরে মোট ৩ হাজার ৯২৬ জন মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিল হয়েছে।

প্রথম ধাপে কুমিল্লায় যে ৩১ জনের সনদ যাচাইয়ের জন্য শুনানি হবে, তাদের নাম এবং গেজেট নম্বরসহ তালিকা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। এই শুনানির মাধ্যমে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি নির্ভুল ডেটাবেজ তৈরি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *