টেকনাফ প্রতিনিধি:
টেকনাফে কোস্টগার্ড ও র্যাবের পৃথক অভিযানে প্রায় পৌনে ৪ কোটি টাকা মূল্যের ১ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবা ও ৫০ লিটার দেশীয় মদসহ দুই মাদক পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে। এসময় মাদক পাচারে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল ও একটি ইজিবাইক জব্দ করা হয়।
সোমবার (৫ মে) সকালে টেকনাফ উপজেলার হাবিরছড়া উত্তর লম্বরী ও মেরিন ড্রাইভ এলাকায় এই অভিযান পরিচালিত হয়।
আটককৃতরা হলেন সাইফুল ইসলাম (২০) ও ওমর ফারুক (২৭)। তারা উভয়েই টেকনাফ থানার বাসিন্দা।
কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এইচ এম এম হারুন-অর-রশীদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার সকালে কোস্টগার্ড স্টেশন টেকনাফ ও র্যাব-১৫ সিপিসি-১ এর সমন্বয়ে সদর ইউনিয়নের হাবিরছড়া উত্তর লম্বরী এলাকায় একটি যৌথ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে একটি সন্দেহজনক মোটরসাইকেল আরোহীকে তল্লাশি করে বস্তার ভেতর লুকানো প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা মূল্যের ১ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবাসহ সাইফুল ইসলামকে আটক করা হয়। এসময় মাদক পাচারে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, একই দিনে কোস্টগার্ড আউটপোস্ট বাহারছড়া কর্তৃক মেরিন ড্রাইভ এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি সন্দেহভাজন ইজিবাইক তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিতে সিটের নিচে অভিনব কায়দায় লুকানো ২০ হাজার টাকা মূল্যের ৫০ লিটার দেশীয় মদ ও ইজিবাইকসহ আব্দুল করিম (৩২) নামের একজনকে আটক করা হয়। অভিযানে মাদক পাচারকারী লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে তার পায়ে আঘাত লাগে। অভিযানকারী দল তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। বর্তমানে আব্দুল করিম চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এইচ এম এম হারুন-অর-রশীদ আরও জানান, উদ্ধারকৃত মোটরসাইকেল, ইজিবাইক ও মাদকদ্রব্যসহ আটক মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, টেকনাফ পৌরসভা এলাকার উপরের বাজারের আলী আহমদ মার্কেটের আবুল কাসেম ইলেকট্রনিক্স স্টোর ও আরিফা ইলেকট্রনিক্স স্টোর নামক দুটি ইলেকট্রনিক্সের দোকানে বিভিন্ন প্রকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী রয়েছে। এই ইলেকট্রনিক্সের ব্যবসার আড়ালে কোস্টগার্ড ও র্যাবের যৌথ অভিযানে আটক ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম এবং আবুল কাসেমের নেতৃত্বে একটি বিশাল ইয়াবা সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। এই সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে আসছে। সিন্ডিকেটটি জল ও স্থল পথ ব্যবহার করে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিয়ে লক্ষ লক্ষ তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। স্থানীয় সচেতন মহল অতি শীঘ্রই আটক ভাগ্নে সাইফুল ইসলামের মতো আবুল কাসেমকেও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবুল কাসেমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভাগ্নে সাইফুল তার দোকানের কর্মচারী। সে সকাল ৯টায় দোকানে আসে এবং রাতে দোকান বন্ধ করে চলে যায়। সাইফুল রাতে কী করে, তা দেখা তার বিষয় নয়। তিনি এসবের সাথে জড়িত নন এবং বিদেশ থেকে আসার পর উপরের বাজারে দোকান ভাড়া নিয়ে ইলেকট্রনিক্সের ব্যবসা করছেন। অবৈধ ব্যবসার সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।